যৌবনের গান প্রবন্ধের মূলভাব | যৌবনের গান কাজী নজরুল ইসলাম

কাজী নজরুল ইসলামের 'যৌবনের গান' প্রবন্ধের মূল বিষয় হলো যৌবনকে একটি বিপ্লবী ও অফুরন্ত প্রাণশক্তির উৎস হিসেবে উপস্থাপন করা। যৌবনের শক্তি, উদ্দীপনা, সাহস ও সৃজনশীলতার জয়গান।

যৌবনের গান


কবি যৌবনের মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতার সেবায় উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন এবং জাতি, ধর্ম, বর্ণের ঊর্ধ্বে এক অসীম শক্তি হিসেবে যৌবনকে দেখেছেন। এই প্রবন্ধে যৌবনের কর্ম ও সেবাভিত্তিক রূপকেও তুলে ধরা হয়েছে, যেমন সেবা করা, অন্ন পরিবেশন করা বা আর্তের পরিচর্যা করা। লেখক এখানে যুবসমাজকে নিস্তেজ, ভীরু ও পরাধীন চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে জাগ্রত, কর্মঠ ও সংগ্রামী হতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি যৌবনকে পরিবর্তনের, বিদ্রোহের এবং নবজাগরণের প্রতীক হিসেবে দেখেছেন।


মূলভাব

যৌবনের প্রশস্তি: প্রবন্ধটির মূল বিষয়বস্তু হলো যৌবনের প্রশস্তি, যেখানে বয়স নির্বিশেষে কর্মোদ্যম ও প্রাণশক্তি দ্বারা যৌবনকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

বিপ্লবী শক্তি: নজরুল ইসলাম যৌবনকে একটি বিপ্লবী শক্তি হিসেবে দেখেছেন যা গতানুগতিকতার সীমা অতিক্রম করতে পারে।

মানবতার সেবা: যৌবনের মূল উদ্দেশ্য হলো মানবজাতির কল্যাণ সাধন করা, যা প্রবন্ধটিতে সেবাপরায়ণতার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

কর্ম ও সেবার অনুপ্রেরণা: তিনি যুবকদের দেশ ও মানবতার সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহিত করেছেন এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কাজ করে যাওয়ার প্রেরণা জুগিয়েছেন।

অফুরন্ত প্রাণশক্তি: প্রবন্ধটি যৌবনের অফুরন্ত প্রাণশক্তি ও গতিশীলতার উপর জোর দিয়েছে, যা মানুষকে কর্মচঞ্চল করে তোলে। 


যৌবনই জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়, কারণ এতে থাকে অপরাজেয় শক্তি, অদম্য উদ্যম ও সাহস। এই শক্তিকে যদি সৎপথে, ন্যায়ের পথে ব্যবহার করা যায়, তবে তা সমাজ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনে। তিনি তরুণদের আহ্বান জানিয়েছেন অন্যায়, শোষণ ও মিথ্যার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে উঠতে।

নজরুলের দৃষ্টিতে যৌবন মানে শুধু বয়স নয়, এটি একটি মানসিক অবস্থা, যা সাহস, প্রেম, কর্ম ও আদর্শে পরিপূর্ণ।


©মাইনুল হাসান

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url